নূতন ভোরের প্রতিবেদন : নির্বাচনী প্রচারে স্বঘোষিত দাদাগিরি বর্ধমানে বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষের।
এদিন বর্ধমান শহরের সূর্য্যনগর মালিরমাঠে প্রাতঃভ্রমনে বেরিয়ে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথাবার্তায় বলেন, আরে যে পারে সে সব জায়গায় দাদাগিরি করতে পারে। দিলীপ ঘোষই পারে সারা পশ্চিমবঙ্গে দাদাগিরি করতে। সেটা আমি করব এখানে। ওরা (তৃণমূল) ঠিক করবে কি করবে। কে পালিয়েছে, কে গেছে, উনি কেন পালিয়ে এসেছেন? কীর্তি আজাদ কোথায়? কোথা থেকে পালিয়ে এসেছে? যতদিন পদ্মফুল ছিল জিতেছে, তারপরে গো হারা হারছে।
এই মালির মাঠে এদিন বর্ধমান দুর্গাপুর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী এলাকাবাসীদের সেই ঘড়ির কাঁটার বিপরীত মুখেই মাঠ প্রদক্ষিণ করতে থাকেন। সেই সময় স্থানীয় এক বাসিন্দা বিজেপির এক নেতাকে বলেন, উনি (দিলীপবাবু) উল্টো দিকে হাঁটছেন কেন? তা শুনেই দিলীপবাবু বলেন, বর্ধমানের লোক সব উলটো হয়ে গেছে গো। গোটা বর্ধমানই উলটো চলে। সমস্ত পার্ক বা মাঠেই দেখছি উলটো হাঁটছে। সব সিধা করতে হবে। এদিন প্রাতঃভ্রমণের সময়ই এলাকার বাসিন্দারা তাঁকে শহরে মাঠের পরিধি কমে যাওয়া ও পরিচ্ছন্নতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আগামীদিনে এই বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করার কথা বলেন। তার উত্তরে দিলীপ জানান, মেনটেইন করা তো আমাদের হাতে থাকবে না, কবজা যাতে না হয়ে যায় সেটা দেখা আমার দায়িত্ব। তারপর সময়ে অনেক কিছুই হবে। বাংলায় প্রতিবাদ করা আন্দোলন করা একটা ফ্যাশন আছে, কাজ কিছু হয় না।
আমি নিবেদন,আবেদন করি না কারোর কাছে, আমি অ্যাকশন করি। খড়গপুরে আমি ছিলাম সেখানে প্রচুর মাঠ রেলের। যে পারছে বসে যাচ্ছে। যেই নড়াচাড়া করতে যাওয়া হবে সেই বলবে আমরা তো এত বছর ধরে আছি। বড় মাঠের একটা অংশ বাংলাদেশীরা ঢেকে নিচ্ছে, অর্ধেকটা কব্জা হয়ে গেছে। তারা তো ভাই পার্মানেন্ট ভোটার নয়, তার সব অধিকার আছে, আপনি এখানে থাকলেও আপনার অধিকার নেই। সেখানে উত্তরপ্রদেশে, আসামে কেমন ট্রিটমেন্ট হচ্ছে দেখছেন তো। মঙ্গলবার পশ্চিম বর্ধমানে তৃণমূল প্রার্থী কীর্তি আজাদ তাঁর অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে হুইল চেয়ারে প্রচার করায় এদিন দিলীপবাবু বলেন, অনেকের হাত ভাঙ্গে, অনেকের পা ভাঙ্গে, অনেকের মাথা ভাঙ্গে, অনেকে হুইল চেয়ারে যায়। এসব সেন্টিমেন্টাল ভোট দেওয়ার দিন শেষ। দেশ উন্নয়নের জন্য ভোট দেবে, মোদির জন্য ভোট দেবে, গ্রাম গঞ্জে সব মানুষ এসব নাটকের ভোট আর দেবে না, কেবল উন্নয়ন, কেবল মোদি। কীর্তি আজাদ তাঁকে পাগল বলায় দিলীপবাবু বলেন, কে পাগল সেটা ৪ তারিখের পরে দেখবেন, এমন হারাবো না এই জীবনে আর ভোটে দাঁড়াবে না। বাংলার মহিলাদের ঝাঁটা জুতো নিয়ে দিলীপ ঘোষকে তাড়া করবে কীর্তি আজাদের এহেন মন্তব্য সম্পর্কে দিলীপবাবু বলেন, বাংলার মা বোনেদের সাথে ওর কি যায় আসে? বাংলার মা বোনেরা ওর ভাষা বোঝে? বাংলার মা বোনদের ভাষা ও বোঝে? আগে নিজের লোকেদের সামলাক।তার পার্টির লোকেরাই তার কথা বুঝতে পারছে না তো মা বোনেরা কি করে বুঝবে? ওকে বাংলার মা বোনেদের কথা ভাবতে হবে না।
যাক বিহারে, যেখান থেকে এসেছে। আর ৪ তারিখের পর প্যাক করে দেবো ভালো করে। বাড়ি বাড়ি প্রচারে বিজেপিদের ঢুকতে না দেওয়ার তৃণমূল ফতোয়া সম্পর্কে দিলীপবাবু বলেন, ওসব ফালতু ডায়লগ দিয়ে সময় কাটাচ্ছেন,উনি যান লোকের কথা শুনুন। এদিকে, এদিন দিলীপ ঘোষের নয়া দাদাগিরির ঘোষণা সম্পর্কে তৃণমূলের মুখপাত্র প্রসেনজিত দাস জানিয়েছেন, ভোটের আগে দিলীপবাবু কি তাহলে বাংলায় ভয়ের বাতাবরণ তৈরী করতে চাইছেন? একদিকে আসামে এনআরসি-র নামে, অন্যদিকে উত্তরপ্রদেশে সংখ্যালঘু মানুষদের উপর অত্যাচার নামিয়ে এনেছে বিজেপি। মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছেন এটাই কি তাহলে দিলীপবাবুর “ট্রিটমেন্ট তত্ত্ব”? বাংলার মানুষকে এইভাবে ভয় দেখানো যাবে না। তারা যথা সময়েই বিজেপিকে এর যোগ্য জবাব দেবে। এখন লোকসভা ভোটে প্রকৃতির গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে রাজনৈতিক গরম রাজনৈতিক উত্তাপ। বাংলার মানুষ তাকিয়ে আছে কে জয়ী হয় ।