নিজস্ব সংবাদদাতা, বর্ধমান, ২৩ মার্চ – আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের মুখেই আবার নতুন করে চাঞ্চল্য ছড়ালো বর্ধমান শহরের বাবুরবাগের নাবালিকা তুহিনা খাতুনের মৃত্যুর ঘটনা। ২০২২ সালের ২ মার্চ বর্ধমান পুরসভার নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণার দিন বাবুরবাগের নতুনপল্লী এলাকার বাসিন্দা তুহিনা খাতুনের বাড়িতে হামলার অভিযোগ ওঠে ওই ২৭নং ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী বসিরউদ্দিন আহমেদ ওরফে বাদশা ও তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে। এমনকি তুহিনা খাতুনদের বাড়ির সামনের দেওয়ালেই তাঁদের তিন বোনের গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলন্ত ছবি আঁকানো হয় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে। এক্ষেত্রেও অভিযোগ ওঠে বাদশারই বিরুদ্ধে। ২ মার্চ দুপুর ৩টে নাগাদ তুহিনা খাতুনের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয় তার শোবার ঘর থেকে।
অভিযোগ ওঠে তাঁদের বিরুদ্ধে লাগাতার অত্যাচার ও হুমকির জেরেই সে আত্মঘাতি হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোটা শহর জু়ড়ে চাঞ্চল্য ছড়ায়। রাজ্য রাজনীতিতেও এর প্রভাব পড়ে। পুলিশ তদন্তে নেমে মোট ১৬জনের নামে অভিযোগ দায়ের হয়। যদিও পুলিশ বাদশাকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। জামিন পান বাদশা। এদিকে, এই ঘটনায় পক্সো আইনে মামলা চলতে থাকে। কিন্তু এখনও বিচার প্রক্রিয়া শেষ না হওয়ায় তুহিনা খাতুনের পরিবারের পক্ষ থেকে আদালতের কাছে অভিযোগ জানানো হয়।
এরপরই আদালত এই কেসে সরকারী আইনজীবীকে সরিয়ে দিয়ে আলিপুর সেশন কোর্টের সরকারী আইনজীবী স্বপন কুমার পাঠককে স্পেসাল পিপি হিসাবে এই কেসে নিযুক্ত করে। শনিবার এই কেসেরই তদন্তে বাবুরবাগে তুহিনা খাতুনদের বাড়িতে এলেন স্বপন কুমার পাঠক এবং তাঁর সহকারী। এদিন স্বপনবাবু জানিয়েছেন, এটি অত্যন্ত হাইভোল্টের কেশ। বিচারক দ্রুত এই কেসের সমাধান করতে চাইছেন। তাই তাঁকে নিয়োজিত করা হয়েছে।
তুহিনা খাতুনের মৃত্যু সংক্রান্ত বিষয়ে তদন্তকারী অফিসার যে রিপোর্ট দিয়েছেন, তার পাশাপাশি তিনি নিজে সরজমিনে গোটা বিষয়টি জানতে চাইছেন। তাই এদিন তুহিনা খাতুনের পরিবারের লোকজন সহ এলাকার মানুষদের সঙ্গে কথা বললেন। এতে তাঁর পক্ষে সওয়াল করতে সুবিধা হবে। এদিকে, লোকসভা নির্বাচনের মুখে তুহিনা খাতুনের মৃত্যু রহস্য নিয়ে তদন্ত প্রক্রিয়ায় গতি আনার ঘটনায় অনেকেই সিঁদুরে মেঘ দেখতে শুরু করেছেন। বিরোধীরাও এটাকে অস্ত্র হিসাবে নিয়ে ভোটের ময়দানে ঝাঁপাবার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে।