১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Advertisement

সংবাদ বিষয়ক মামলায় হাইকোর্টের আদেশনামা দাখিল কালনা আদালতে

নিজস্ব প্রতিনিধি : সম্প্রতি সংবাদ বিষয়ক এক মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের তরফে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিক কে আইনী রক্ষাকবচ সহ ৩১ জুলাই পর্যন্ত অন্তবর্তী স্থগিতাদেশ জারী করা হয়েছে। সেইসাথে রাজ্যের আইনজীবীর কাছে নিম্ন আদালতে এই মামলার সমস্ত কাগজপত্র চাওয়া হয়েছে। কলকাতা হাইকোর্টের আদেশনামার সার্টিফাইড কপি জমা দিতে অতি সম্প্রতি পূর্ব বর্ধমান জেলার কালনা মহকুমা আদালতে এসিজেম এজলাসে গিয়েছিলেন সংশ্লিষ্ট মিডিয়ার সম্পাদক মোল্লা জসিমউদ্দিন। তাঁর আইনজীবী পার্থ সারথি কর ভারপ্রাপ্ত এসিজেম এজলাসে সওয়ালের মাধ্যমে সার্টিফাইড কপি জমা দেন।যা পূর্বস্থলী থানা এবং মঙ্গলকোট থানা কে অবগত করানো হয়।গত ১৫ মে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিবেক চৌধুরীর এজলাসে উঠেছিল পূর্বস্থলী থানা এলাকায় এই খবর সংক্রান্ত মামলা।এক ওয়েব পোর্টালের সম্পাদক মোল্লা জসিমউদ্দিন মামলা খারিজের আবেদন জানিয়ে এই মামলাটি করেছেন। মামলাকারীর আইনজীবী বৈদূর্য ঘোষাল জানিয়েছেন -‘ কলকাতা হাইকোর্ট মামলা খারিজের আবেদন গ্রহণ করেছে। রাজ্যের কাছে ওই মামলার যাবতীয় তথ্য আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে রিপোর্ট আকারে তলব করেছে। সেইসাথে ওই ওয়েব পোর্টাল সম্পাদক কে আইনী রক্ষাকবজ দেওয়া হয়েছে।নিম্ন আদালতে মামলার সমস্ত প্রক্রিয়া স্থগিত করা হয়েছে ‘ ।মামলাকারী দাখিল মামলায় প্রশ্ন তুলে জানিয়েছেন -” প্রকাশিত খবর সত্য না মিথ্যা? সেটি নির্ণয় করবে প্রেস কাউন্সিল।

 

Advertisement

 

 

Advertisement

 

 

Advertisement

এখানে পুলিশ কি করে খবর সংক্রান্ত মামলা রুজু করলো? হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে যে জনরোষ তৈরীর অভিযোগ তোলা হয়েছে তার সপক্ষে সাইবার রিপোর্ট এবং জনরোষের বিস্তারিত তথ্য কোথায়? তাছাড়া কোন খবর মিথ্যা বলে অভিযোগকারীর মনে হলে তা সংশ্লিষ্ট সম্পাদক কে চিঠি/ ইমেল মারফত জানাতে হয়।এরপর আইনী নোটিশ পাঠাতে হয়। কোথায় খবরটি তথ্য বিকৃত করা হয়েছে? তাই জানানো হয়নি? মামলা গ্রহণের তিন বছর পর কেন পুলিশের চার্জশিট?” উল্লেখ্য, এক এনজিও সংস্থার দুর্নীতি বিষয়ক খবর প্রকাশ করেছিলেন তৎকালীন সাংবাদিক শ্যামল রায় (বর্তমানে মৃত) । খবর প্রকাশে ওই ওয়েব পোর্টালের সম্পাদক মোল্লা জসিমউদ্দিন কে অভিযুক্ত করা হয়। নিম্ন আদালতের কোন সমন না দিয়েই সরাসরি ‘ওয়ারেন্ট’ ইস্যু করা হয় কালনা মহকুমা আদালতে। মামলাকারী পূর্বস্থলী থানার মামলা গ্রহণে সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই মামলার তদন্তকারী পুলিশ অফিসার, সংশ্লিষ্ট থানার আইসি এবং জেলার পুলিশ সুপার কে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছিলেন।তার উত্তর অবশ্য দেয়নি পুলিশ কর্তৃপক্ষ। ভারতীয় গনতন্ত্রে চতুর্থ স্তম্ভ হিসাবে সংবাদমাধ্যম পড়ে।

 

Advertisement

 

 

Advertisement

আর এই সংবাদমাধ্যম মূলত তিনপ্রকার হলেও চলতি সময়ে পোর্টাল নিউজ সংবাদমাধ্যমের আরেকটি রুপে এসেছে। ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে রাজ্যসরকারের সাংবাদিকদের পেনশন সংক্রান্ত এক বিজ্ঞপ্তিতে ( তারিখ ২৯/০৩/২০১৮, নাম্বার ১২১৯/ডিআই/আইসিএ /এন) ২ নাম্বার সিরিয়ালে ‘এ’ বিভাগে পরিস্কার উল্লেখ রয়েছে যে – সাংবাদিক হিসাবে ওয়েব পোর্টাল সাংবাদিকেরাও পড়ছে। অপরদিকে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে গঠিত ‘প্রেস কাউন্সিল ‘ আছে সংবাদ সম্পকিত অভিযোগগুলি পর্যালোচনা করে ব্যবস্থা নিতে। সাধারণত কোন সংবাদমাধ্যমে কোন খবর নিয়ে কারও অসন্তোষ, অভিযোগ থাকলে সেই সংবাদমাধ্যম কে লিখিতভাবে অভিযোগ জানাতে হয় সংবাদটি সংশোধন করার জন্য। এতে কোন কিছু না হলে আইনজীবীর মাধ্যমে লিগ্যাল নোটিশ পাঠাতে হয় নিদিস্ট সময়সীমা উল্লেখ করে। কেননা প্রকাশিত কোন খবর নিয়ে পুলিশ কোন মামলা সরাসরি গ্রহন করতে পারেনা বলে প্রবীণ সাংবাদিকরা জানিয়েছেন ।

 

Advertisement

 

 

Advertisement

 

উল্লেখ্য গত ৩০/১০/০৬ তারিখে হাইকোর্টের বিচারপতি সৌমিত্র পালের এজলাসে ( সিরিয়াল নাম্বার ৫৭, রিট নাম্বার ডাবলু পি ২১০৩৭) গুসকারা নিবাসী জীবরাজ প্যাটেল নামে এক ব্যবসায়ী স্থানীয় এক পাক্ষিক পত্রিকায় প্রকাশিত খবর নিয়ে রিট পিটিশন করেছিলেন।সেখানে উক্ত পাক্ষিক পত্রিকার পাশাপাশি রাইটার্সের হোম বিভাগ, পুলিশসুপার ( বর্ধমান), জেলাশাসক (বর্ধমান) এবং আইসি ( আউসগ্রাম) দের কে পক্ষ করা হয়। বিচারপতি এই রিট মামলা খারিজ করার আদেশনামায় উল্লেখ রাখেন যে – ‘ সংবাদ বিষয় অভিযোগটি নিদিষ্ট ফোরামে অনুমোদন আগে দরকার ‘। অর্থাৎ প্রেস কাউন্সিলের অনুমোদন।

Advertisement

 

 

Advertisement

 

ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে এক ওয়েব পোর্টাল মিডিয়া কর্তৃপক্ষ কে লিখিত প্রতিবাদপত্র না পাঠিয়ে, আইনজীবীর মাধ্যমে লিগ্যাল নোটিশ না দিয়ে সরাসরি প্রকাশিত সংবাদ নিয়ে বিচারকের ভুমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলী থানার পুলিশ । গত ৩০/০৮/১৮ তারিখে রুজু করা (পিএস কেস নাম্বার ৩১৯/১৮) মামলায় চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে নোটিশ পাঠানো হয়েছিল অভিযুক্ত মিডিয়া হাউসের সম্পাদক ও সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকের বাড়ীর ঠিকানায়। ওই থানার পুলিশের এহেন অতি সক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। গত জুন মাসের শেষের দিকে কালনা মহকুমা আদালতে এসিজেম এজলাসে আইনজীবী পার্থ সারথি করের মাধ্যমে কলকাতা হাইকোর্টের আদেশনামার সার্টিফাইড কপি জমা দিলেন সংশ্লিষ্ট মিডিয়ার সম্পাদক মোল্লা জসিমউদ্দিন।

Advertisement