নূতন ভোরের প্রতিবেদন : কলকাতার গার্ডেনরিচ কাণ্ডের জেরে ইতিমধ্যে উত্তাল রাজ্য। বর্ধমান পুরসভাও কঠোর পদক্ষেপ নিল। বর্ধমান পুরসভার পুরপ্রধান পরেশচন্দ্র সরকার জানিয়েছেন, বর্তমান পুরসভার বোর্ডে আসীন হয়েই তাঁরা অবৈধ নির্মাণ বা বিনা অনুমতিতে কোনোরকম নির্মাণ করার বিষয়টি কঠোরভাবে রক্ষা করার চেষ্টা করে চলেছেন। গার্ডেনরিচ কাণ্ডের ঘটনায় কার্যত তাঁরাও আতংকিত হয়েছেন। কারণ বর্ধমান পুরসভা এলাকাতেও যে অবৈধ নির্মাণ হচ্ছে না, একথা তাঁরাও জোর করে বলতে পারছেন না। কিন্তু যখনই তাঁরা খবর পাচ্ছেন তখনই তাঁরা ব্যবস্থা নিয়েছেন। পরেশবাবু জানিয়েছেন, এই সময়কালে তাঁরা বেশ কয়েকটি বহুতল যা নিয়ম মেনে হয়নি তা যেমন ভাঙতে পেরেছেন তেমনি পুরসভার নিয়ম না মানায় অনেককে ইতিমধ্যেই নোটিশ পাঠিয়েছেন।
তিনি জানিয়েছেন, সম্প্রতি বর্ধমান শহরের আলমগঞ্জ এলাকায় দুটি এই ধরণের নির্মাণ হওয়ায় তাঁদের নোটি পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে একটি অবৈধ বাড়ি আগামী ২১ মার্চ ভাঙার নোটিশও জারী হয়েছে। কিন্তু মালিকপক্ষ ১ মাস সময় চেয়ে আবেদন করায় তাঁর আবেদন মঞ্জুর করা হয়েছে। ওই একমাসের মধ্যে মালিকপক্ষ নিজেরাই অবৈধ নির্মাণ ভেঙে ফেলবেন বলে কথা দিয়েছেন। পুরপ্রধান জানিয়েছেন, সম্প্রতি শহরের বেশ কয়েকটি জলাশয়কে চুপিসারে বোজানোর খবর মেলায় তিনি সরজমিনে তা খতিয়ে দেখে বন্ধ করেছেন। পরেশবাবু জানিয়েছেন, কিছু অসাধু মানুষ লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে বাড়ি তৈরী করলেও পুরসভার কাছ কয়েকহাজার টাকার বিনিময়ে বৈধ অনুমতি নিতে চাননা। তাঁদের বিরুদ্ধে তাঁরা আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন।
গার্ডেনরিচ কাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি জানিয়েছেন, বর্ধমান পুরসভার ৩৫টি ওয়ার্ডেই কোথায় কি কি ধরণের অবৈধ নির্মাণ হয়েছে বা হচ্ছে তা খতিয়ে দেখে ইঞ্জিনিয়ার এবং পুরকর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই রিপোর্ট পেলেই তাঁরা পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। উল্লেখ্য, সম্প্রতি বর্ধমান শহরের রাজগঞ্জে মোহন্ত অস্থলের হেরিটেজ ভবনকে ধ্বংস করা নিয়ে কড়া নির্দেশ জারী করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। ঘটনাস্থল সরজমিনে পরিদর্শন করে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে জেলাশাসককে। পরিদর্শনের সময় পুরপ্রতিনিধি, হেরিটেজ কমিশন ও মামলাকারীকেও হাজির থাকার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুরসভা এবং হেরিটেজ কমিশনকেও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বিশদে রিপোর্ট পেশ করতে বলা হয়েছে।
কিভাবে হেরিটেজ সম্পদকে সংরক্ষণ করা যায় রিপোর্টে তা যেন উল্লেখ থাকে নির্দেশে সেকথা সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা। যাতে হেরিটেজ কাঠামো ধ্বংস না করা হয় সে ব্যাপারে কঠোর নজরদারির জন্য জেলার পুলিস সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। প্রয়োজনে সেখানে পুলিস পিকেট বসানোর জন্যও এসপিকে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।