নূতন ভোরের প্রতিবেদন : বর্ধমান জেলায় বাম-কংগ্রেস জোট ,কিন্তু কংগ্রেসকে বাদ দিয়েই সিপিএমের প্রচার আর এই নিয়েই রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব কংগ্রেস শিবিরে।
পূর্ব বর্ধমান জেলা ৪টি লোকসভা আসনের সমাহার। একদিকে যেমন বর্ধমান পুর্ব আসন, অন্যদিকে রয়েছে বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা আসন। এরই সঙ্গে রয়েছে বোলপুর লোকসভার অধীন আউশগ্রাম, কেতুগ্রাম এবং মঙ্গলকোট বিধানসভা আসন। এছাড়াও রয়েছে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর লোকসভার অধীনে খণ্ডঘোষ ও গলসী বিধানসভার একাংশ। অথচ এই ৪ কেন্দ্রে পূর্ব বর্ধমান জেলায় বামেদের প্রচারে কোথাও দেখা মিলছে না জোটসঙ্গী কংগ্রেসের।
এমনকি দেওয়াল লিখনেও কোনো উচ্চবাচ্য নেই কংগ্রেসের। যা নিয়ে রীতিমত অপমানে ফুঁসছে কংগ্রেস। জেলা যুব কংগ্রেসের সভাপতি মিঠুন সরকার জানিয়েছেন, লোকসভা ভোটকে সামনে রেখে গোটা ভারত জুড়ে ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক জোট তৈরি হয়েছে। সাম্প্রদায়িক শক্তি বিজেপি ও আরএসএস-এর বিরুদ্ধে অন্যান্য রাজ্যের মতো আমাদের রাজ্যেও বামফ্রন্টের সাথে কংগ্রেসের আসন সমঝোতা হয়েছে।
সেই সূত্র ধরেই পূর্ব বর্ধমান জেলার বর্ধমান-দুর্গাপুর এবং বর্ধমান পূর্ব আসন দুটিতে বামফ্রন্টের সিপিআই(এম) দল প্রার্থী দিয়েছে। কোন সূত্র অনুযায়ী এই দুটি আসন বামেদের ছেড়ে দেওয়া হল বা কী আলোচনা হয়েছে সেটা জেলার কংগ্রেস কর্মীরা জানতে চাইছেন। আর যদি আসন সমঝোতা হয়েই থাকে তাহলে বামেদের নির্বাচনী প্রচারের দেওয়াল লিখন বা অন্যান্য প্রচার সামগ্রীতে কংগ্রেস দলের কথা কেন থাকছে না?
এটা জেলার বাম নেতৃত্ব জেলার কংগ্রেস কর্মীদের অসম্মান ও অপমান করছেন। এটা সমস্ত কংগ্রেস কর্মীদের কথা। উল্লেখ্য, বর্ধমান দুর্গাপুর আসনে সুকৃতি ঘোষাল, বর্ধমান পূর্ব আসনে নীরব খাঁ, বোলপুর আসনে শ্যামলী প্রধান এবং বিষ্ণুপুর আসনে শীতল কৈবর্ত্যকে বামপ্রার্থী হিসাবে দাঁড় করানো হয়েছে। গোটা জেলা জুড়েই এই ৪ কেন্দ্রের প্রার্থীদের জন্য যে দেওয়াল লিখন করা হয়েছে তাতে কোথাও বাম-কংগ্রেসের জোট প্রার্থী হিসাবে লেখা হয়নি। লেখা হয়েছে সিপিআইএম প্রার্থী। আর এতেই চটেছে কংগ্রেস। কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের ভোট প্রচারে যুক্ত না করায় ক্ষোভে ফুঁসছে হাত শিবির।
যদিও এব্যাপারে খোদ পূর্ব বর্ধমান জেলা সিপিএমের সম্পাদক সৈয়দ হোসেন জানিয়েছেন, এই রকম কোনও অভিযোগ কংগ্রেস করেছে বলে আমাদের জানা নেই। রাজ্য জুড়েই আমরা যারা তৃণমূল ও বিজেপি বিরোধী তাঁদের এক ছাতার তলায় নিয়ে আসার চেষ্টা করছি। যারা গণতন্ত্রের পক্ষে, ধর্মনিরপেক্ষতার পক্ষে এই সমস্ত শক্তিকে ও তৃণমূল-বিজেপির বোঝাপড়ার বিরুদ্ধে তাঁদের সকলকেই এক প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসার চেষ্টা চলছে। কেউই বাদ যাবে না। দেওয়াল লিখন যারা লিখছেন তাঁরা নিজেদের দলের নাম নিচে লিখছে। ফরওয়ার্ড ব্লক, সিপিআই, আরএসপি, সিপিআই(এম) যে দেওয়াল লিখবে নিচে সেই দলের নাম থাকবে। কংগ্রেস বামফ্রন্টের প্রার্থীর পক্ষে দেওয়াল লিখলে নিচে তাঁদের দলের নাম লিখবে। কেউ নিজে দেওয়াল লিখে অন্য দলের নাম লিখবে? এই নিয়ে প্রশ্ন ওঠাই ঠিক নয়।